Environmental Science and Disaster Management

Feature

পরিবেশ বিজ্ঞান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা - কেন পড়বেন ?
মো : সাদরিল ইসলাম খান

একটা সময় ছিল যখন মানুষ বন জঙ্গলে বসবাস করত। তাদের পরনে থাকত গাছের বাকল আর তাদের আহার জোগাড় হত শিকারের মাধ্যমে। পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল কম আর মানুষের বিস্তৃতীও ছিল সীমিত। কিন্তু মানুষ ধীরে ধীরে বুদ্ধির পরিচয় দিতে থাকে। কৃষিকাজ শিখে। উৎপন্ন হয় ফসল আর বাড়তে থাকে জনসংখ্যা। চাপ বাড়ে ভূমির উপর আর ধ্বংস হয় বনায়ন। মানুষ থেমে থাকে না, তারা প্রবেশ করে শিল্পায়নের যুগে। আর তখন থেকে আজও এ বিশাল অর্থনীতির চাপ পরিবেশের উপর চলমান। মানুষ মূলত তার খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, ঔষধি ইত্যাদি সকল কিছুর জন্যই প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু এ সকল চাহিদা মেটানোর  অধিক চাপে পৃথিবীর জলবায়ু আজ পরিবর্তনশীল। আর এতে করে পরিবেশ আর বাস্তুসংস্থান যেমন ক্ষতির সম্মুখীন, একইভাবে মানুষের অস্তিত্বই হুমকির মুখে। যেমন সম্প্রতি ইউরোপে খরার কারণে তাদের কৃষিকাজ ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে আর এ খরার জন্য দায়ী মূলত জলবায়ু পরিবর্তন। এ সকল বিষয়ের গুরুত্বকে অনুধাবন করে বর্তমান পৃথিবীতে ক্রমেই পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়াস চলছে। বাড়ছে এ বিষয়ের উপর শিক্ষা, গবেষণা এবং কর্ম। আর গোটা পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে, বাংলাদেশেও এ নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম বিস্তৃত হচ্ছে।

ভূবিদ্যা, সমুদ্রবিদ্যা, প্রাণীবিদ্যা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে সামগ্রিকভাবে পরিবেশ বিজ্ঞান একটি ফলিত ও স্বতন্ত্র বিষয়। পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তন্মধ্যে অত্যন্ত সুপরিচিত এবং পুরাতন হচ্ছে ড্যাফোডিল আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের 'পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ'। 

পরিবেশ নিয়ে গবেষণা এবং শিক্ষায় এক অগ্রদূত ড্যাফোডিল আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের 'পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা' বিভাগ। বর্তমানে এর সকল কার্যক্রম সম্পন্ন হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও একমাত্র স্থায়ী ক্যাম্পাস ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটি, আশুলিয়াতে। গুটিকয়েক শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বিভাগটি আজ শত শত শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখর। এর রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ক্লাসরুম যা দ্বারা শিক্ষার্থীদের যুগোপযুগী পাঠদান করা হয়ে থাকে। ব্যবহারিক জ্ঞান ও শিক্ষার জন্য বিভাগের রয়েছে নিজস্ব গবেষণাগার যাতে আছে পরিবেশ দূষণ ও সংরক্ষণ নিয়ে বিস্তর গবেষণার সুযোগ। রয়েছে নিজস্ব জিওগ্রাফিক ইনফোরমেশন সিস্টেম (জি আই এস) ল্যাব। একজন শিক্ষার্থীকে পরিবেশ বিষয়ে দক্ষ গ্রাজুয়েট হিসেবে গড়ে তুলতে যেসব বিষয় অধ্যয়ন প্রয়োজন তার সবই প্রায় এই বিভাগে সুচারুরূপে পড়ানো হয়। যেমন - জীববৈচিত্র সংরক্ষণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ ও গণস্বাস্থ্য/আইন/অর্থনীতি/লিঙ্গ, বর্জ্য ও বর্জ্যপানি ব্যবস্থাপনা, উপকূলীয় পরিবেশ, পরিবেশ ও পর্যবেক্ষণ/মডেলিং/প্রভাব নিরীক্ষণ, প্রাকৃতিক সম্পদ, মৃত্তিকা ও পানিসম্পদ, বনভূমি, বায়ু ও জলমন্ডল ইত্যাদি। এছাড়াও ইংরেজি, গণিত, পরিসংখ্যান ইত্যাদি বিষয়েও শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে বিভাগের প্রচেষ্টা বিদ্যমান। বিষয়গুলো পড়ানোর জন্য বিভাগে রয়েছে অভিজ্ঞ শিক্ষক যারা দেশের ও বিদেশের ডিগ্রিধারী এবং স্বনামধন্য গবেষক।

বিভাগের প্রতিটি ছাত্র ছাত্রীকেই তাদের সমগ্র পড়াশোনার সময়ে সৌহার্দ্যতার সাথে আলাদা গুরুত্ব দেয়া হয়। তাদের শিক্ষা ও ব্যক্তিগত জীবনে উন্নতির জন্য বিভাগের শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ অভিভাবকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে। সচরাচর ক্লাসরুমের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন শিক্ষার উপকরণ, যেমন - ব্লেনডেড লার্নিং সেন্টার (বি এল সি ), গো এডু, আই ও ইউ ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের আধুনিক ও তথ্য প্রযুক্তি সমৃদ্ধ শিক্ষা প্ৰদান করা হয়। উল্লেখ্য যে, এই বিভাগের নানাবিধ গবেষণা ও দিকনির্দেশনা অনস্বীকার্য ভূমিকা পালন করেছে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়কে ইউ আই গ্রীন মেট্রিক র‍্যাঙ্কিংয়ে টানা তিনবার প্রথম স্থান অর্জনে।

পরিশেষে কথা বলা যাক ক্যারিয়ার নিয়ে। পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে চাকরিক্ষেত্র সারা বিশ্বে সম্প্রসারণশীল। বাংলাদেশে সাধারণ সরকারি চাকরির পাশাপাশি রয়েছে বিশেষায়িত চাকরির ক্ষেত্র - পরিবেশ অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ অধিদপ্তর, ইত্যাদি। দেশে রয়েছে বিভিন্ন এনজিও তে চাকরির সুযোগ। রয়েছে বিভিন্ন কারিগরি (গবেষণাগার,  জি আই এস নিরীক্ষণ) চাকরির সম্ভাবনা। বিদেশে রয়েছে বৃত্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ। আরো রয়েছে পরিবেশ সংক্রান্ত বিভিন্ন দিকে উদ্যোক্তা হবার দারুন সম্ভাবনা। এ বিভাগের অনেক গর্বিত গ্রাজুয়েট আজ তাদের কর্মক্ষত্রে উজ্জ্বলতার সাক্ষরতা রেখে যাচ্ছে।

পরিবেশ বিজ্ঞান এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বর্তমান পৃথিবীতে অত্যন্ত চাহিদাসম্পন্ন একটি বিষয়। সুনিশ্চিত ক্যারিয়ার গড়ার পাশাপাশি এ বিষয়ে পড়ে সমাজ ও দেশ গঠনে অসামান্য অবদান রাখার অনবদ্য সুযোগ রয়েছে। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ বিভাগে ভর্তি হতে যোগাযোগ করুন বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিশন অফিস, ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটি তে। 

 

লেখক - জ্যেষ্ঠ প্রভাষক, পরিবেশ বিজ্ঞান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি